নতুন করে অনুমোদিত সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করছেন, বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ বাতিল হলেও নতুন অধ্যাদেশে কিছু ধারা পূর্বের সমস্যাগুলোকে ফিরিয়ে আনতে পারে।
সরকার দাবি করেছে, নতুন এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সাইবার স্পেস সুরক্ষা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরাধের সংজ্ঞা যথাযথভাবে নির্ধারণ না করায় এবং বিতর্কিত ধারাগুলোর অপব্যবহার বন্ধে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের অভাবে আইনটি নিয়ে উদ্বেগ রয়েই গেছে।
১. সাইবার বুলিং সংক্রান্ত ধারা:
এতে বলা হয়েছে, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে অপমান বা হয়রানি করতে তথ্য, ভিডিও বা অডিও প্রচার করলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ধারা ব্যাখ্যার অভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হতে পারে।
২. পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার ও তল্লাশি:
এই বিধানটি অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি করতে পারে।
৩. ধর্মীয় অনুভূতি এবং মানহানির ধারা:
বিশেষজ্ঞদের মতে, ধর্মীয় অনুভূতির দোহাই দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়া এবং সাংবাদিকদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “আইনটি যদি এভাবেই পাস হয়, তাহলে এটি হতাশাজনক হবে। অপরাধগুলোর সংজ্ঞায়িত অভাব এবং অপরাধের ধরণে অস্পষ্টতা অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি করবে।”
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সরকারের কাছে অনুরোধ করেছে, অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করার আগে অন্তত এক মাস সময় নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে পর্যালোচনা করতে।
অধ্যাদেশে জুয়া খেলা ও এর প্রচার অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই অপরাধে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অধ্যাদেশটি যাতে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য হয় এবং এর অপব্যবহার না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত নিয়ে আইনের সংশোধন প্রয়োজন।
এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং আইনটি বাস্তবায়নের আগে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।