বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান না ফেরার দেশে চলে গেছেন। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) গভীর রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)-তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শিল্পী সমিতির সভাপতি শহীদ হাসান মিশা (মিশা সওদাগর) তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অঞ্জনা রহমানের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হওয়ায় টানা ১০ দিন অচেতন অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের সিসিইউতে রাখা হয়েছিল। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত বুধবার (১ জানুয়ারি) রাতে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়।
জানা গেছে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে তিনি টানা ১৫ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করলেও তেমন কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নৃত্যশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা অঞ্জনা রহমান অভিনয়ের জগতে প্রবেশের পর দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। দেশীয় সিনেমার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তার ব্যাপক পরিচিতি ছিল। যৌথ প্রযোজনার সিনেমা এবং বিদেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করা একমাত্র দেশীয় অভিনেত্রী হিসেবে তিনি অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন।
তার অভিনীত সিনেমার সংখ্যা ৩০০-এরও বেশি। এ দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন।
অঞ্জনার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশীয় চলচ্চিত্র জগতে। তার অসামান্য অবদান দর্শক এবং সহশিল্পীদের হৃদয়ে চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে।
দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ তার সহকর্মীরা তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। অঞ্জনা রহমান ছিলেন এমন এক শিল্পী, যিনি তার কর্মদক্ষতা ও অভিনয়ের মাধ্যমে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন।
অঞ্জনার বিদায়ে বাংলাদেশ হারাল একজন প্রতিভাবান অভিনেত্রীকে, যার অভাব সহজে পূরণ হবে না। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।