ছাতু, বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি পুষ্টিকর খাবার, এখন শুধু গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে শরীরের সার্বিক সুস্থতায় অসাধারণ ভূমিকা রাখে। চলুন জেনে নিই ছাতুর পুষ্টিগুণ ও এর উপকারিতা।
ছাতু কী থেকে তৈরি হয়?
ছাতু মূলত ছোলার ডাল থেকে তৈরি হলেও যব, বার্লি, বাজরা এবং অন্যান্য শস্যদানা থেকেও এটি প্রস্তুত করা যায়। এই শস্যদানাগুলো থেকে ছাতু তৈরি করার সময় এর প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকে, যা শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকর।
ছাতুর উপকারিতা
1.ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
ছাতুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। ফলে অযথা খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমে যায়। এটি স্লো ফুড হিসেবেও পরিচিত।
2.হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়
ছাতুতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এটি রক্তের সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
3.মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়
ছাতুতে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন ও খনিজ, যা মস্তিষ্ক ঠান্ডা ও কার্যক্ষম রাখে। প্রতিদিন সকালে ছাতু খেলে মস্তিষ্কে সঠিক রক্ত সঞ্চালন নিশ্চিত হয়।
4.ত্বকের সজীবতা ধরে রাখে
ভিটামিন বি, সি, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং আয়রনের মতো উপাদান ছাতুকে ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী করে তোলে।
5.হজমে সহায়ক
ছাতুতে থাকা আঁশ, ম্যাঙ্গানিজ এবং ম্যাগনেশিয়াম হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
6.রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে
ছাতুর আঁশ রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল বাড়তে দেয় না। ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
কীভাবে ছাতু খাবেন?
ছাতু খাওয়ার সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি হলো পানিতে মিশিয়ে খাওয়া। আপনি স্বাদ বাড়ানোর জন্য সামান্য লবণ যোগ করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত ছাতু খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে।
সতর্কতা
যাঁরা কিডনির পাথরের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের ছাতু এড়িয়ে চলা উচিত।
ছাতু সঠিক পরিমাণে খেলে এটি আপনার দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে। প্রতিদিন সকালে ছাতু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতা উপভোগ করুন।