সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ সম্প্রতি বৃদ্ধি করেছে ভারত। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ফলে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তিনি ভারতে আশ্রয় নেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য ভারতের কাছে একাধিকবার অনুরোধ জানালেও, এ বিষয়ে ভারত এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি বর্তমানে দিল্লির একটি সুরক্ষিত স্থানে অবস্থান করছেন। ভারতের আইন অনুযায়ী শরণার্থী বা রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান না থাকায়, তাকে আনুষ্ঠানিক আশ্রয় দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ, গুম, ক্রসফায়ার, পিলখানা হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা চলমান।
চিফ প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত আনা গেলে তার বিচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করেনি। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অনুরোধের প্রাপ্তি স্বীকার করা হলেও, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
শেখ হাসিনার ভিসা বাড়ানোর বিষয়টি এমন সময় সামনে এলো, যখন তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
অন্যদিকে, ভারতের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে ভারত কূটনৈতিকভাবে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এ বিষয়ে বলেন, তার মায়ের ভিসা বাতিল বা রাজনৈতিক আশ্রয়ের খবর গুজব।
শেখ হাসিনার ভিসা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ অব্যাহত রয়েছে। তবে ভারত এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি।