সিলেট থেকে পণ্য রপ্তানি বন্ধের যে কারণ জানা গেল

  • বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০২ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ৪ সপ্তাহ আগে
  • Print

 

সিলেট থেকে ইউরোপ, আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে কৃষিপণ্য রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষত এই অঞ্চলে উৎপাদিত সাইট্রাস ফল, সবজি এবং স্থানীয় কৃষিপণ্যের চাহিদা সিলেটি প্রবাসীদের মধ্যে অনেক বেশি। তবে ‘প্যাকিং হাউস’ না থাকার কারণে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মিত অত্যাধুনিক কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করেও পণ্য রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না।

২০২২ সালে ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মিত হয়েছে ১০০ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন অত্যাধুনিক কার্গো কমপ্লেক্স। এটি ঢাকার চেয়েও উন্নত প্রযুক্তির। আধুনিক স্ক্যানার ও সিকিউরিটি সিস্টেমসহ সব সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, প্যাকিং হাউসের অভাবে এই কমপ্লেক্সটি কোনো কাজে আসছে না।

কৃষিপণ্য রপ্তানির জন্য আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রণ ও প্যাকেজিং বাধ্যতামূলক। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এসব পণ্যকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কুলিং হাউসে সংরক্ষণ করতে হয়। সিলেটে এই ধরনের ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়ীদের নারায়ণগঞ্জের শ্যামপুরে প্যাকিং হাউসে যেতে হচ্ছে, যা সময় ও খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

সিলেটে উৎপাদিত ‘গোয়ালগাদ্দা শিম’, নাগা মরিচ, সাতকরা, খাসিয়া পান, লেবু, তইকর, কচুমুখী, লতি, এবং অন্যান্য কৃষিপণ্যের চাহিদা ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক। বিশেষত, সিলেটি প্রবাসীদের কারণে এসব পণ্যের কদর সুপারশপ থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত পর্যায়েও অনেক বেশি।

জালালাবাদ ভেজিটেবল অ্যান্ড ফ্রোজেন ফিশ এক্সপোর্ট গ্রুপের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “প্যাকিং হাউস স্থাপন না হলে কার্গো কমপ্লেক্সও অকেজো হয়ে থাকবে। এটি হলে স্থানীয় কৃষিপণ্য সরাসরি রপ্তানি করা সম্ভব, যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে।”

বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরিন জাহান গত ৩ ডিসেম্বর সিলেটে প্যাকিং হাউস স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন। ব্যবসায়ী ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাত্র ২-৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নারায়ণগঞ্জের শ্যামপুরের মতো একটি প্যাকিং হাউস সিলেটে স্থাপন করা সম্ভব। এতে স্থানীয় কৃষি ও কুটিরশিল্প পণ্যের রপ্তানি বাড়বে। পাশাপাশি, সিলেট থেকে সরাসরি পণ্য রপ্তানির পথ সুগম হবে।

সিলেট থেকে সরাসরি পণ্য রপ্তানির জন্য কার্গো কমপ্লেক্সের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্যাকিং হাউস স্থাপন জরুরি। এটি না হলে ২৬ কোটি টাকার এই প্রকল্প অর্থহীন হয়ে থাকবে। প্রশাসনের যথাযথ উদ্যোগ এবং প্যাকিং হাউস নির্মাণের মাধ্যমে সিলেটের কৃষিপণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও নিউজ