ইসলাম সহজ, সুন্দর এবং মানবিক ধর্ম। মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইসলাম বিকল্প ও সহজ সমাধান প্রদান করেছে। মোজার উপর মাসেহ করার বিধানও তার একটি উদাহরণ। যারা দীর্ঘ সময় জুতা বা মোজা পরিধান করে থাকেন, তাদের জন্য এটি একটি বিশেষ সুযোগ।
রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও মোজার উপর মাসেহ করেছেন এবং উম্মতের জন্য এটি অনুমোদন দিয়েছেন। তবে এই বিশেষ সুযোগ পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।
কোন ধরনের মোজার উপর মাসেহ বৈধ?
হাদিস অনুযায়ী, মোজার উপর মাসেহ বৈধ হওয়ার জন্য নিম্নলিখিত শর্তগুলো পূরণ করতে হবে:
- মোটা ও টেকসই মোজা:
- মোজা এমন হতে হবে যাতে জুতা ছাড়া তিন মাইল পর্যন্ত হাঁটা যায়।
- চামড়া বা চামড়াজাত মোজার উপর মাসেহ করা বৈধ। তবে কটন, নায়লন বা পশমের মোজার ক্ষেত্রে এই শর্তগুলো পূরণ করতে হবে।
- পানি প্রতিরোধী:
- মোজা পানি শোষণ করবে না এবং তা ভেদ করে পায়ে পানি পৌঁছাবে না।
- গোড়ালি এবং পায়ের সম্পূর্ণ আবরণ:
- মোজা পায়ের গোড়ালি এবং পুরো অংশ ঢেকে রাখবে।
- স্বতন্ত্রভাবে পায়ে সেঁটে থাকা:
- মোজা কোনো কিছুর সাহায্য ছাড়া পায়ের সাথে লেগে থাকবে।
সাধারণ কটন বা নায়লনের মোজায় এসব শর্ত পূরণ না হলে তার উপর মাসেহ বৈধ হবে না।
মাসেহ করার সময়সীমা
- মুকীমের জন্য:
একদিন এক রাত (২৪ ঘণ্টা)।
- মুসাফিরের জন্য:
তিন দিন তিন রাত (৭২ ঘণ্টা)।
মোজা পরিধানের পর এই সময়সীমার মধ্যে পা না ধুয়ে শুধু মোজার উপরিভাগে মাসেহ করলেই পবিত্রতা অর্জিত হবে।
মাসেহ করার পদ্ধতি
- দুই হাতের আঙুল ভেজা অবস্থায় পায়ের আঙুলের উপরিভাগে রাখুন।
- হাত দুটি পায়ের গোছার দিকে টেনে আনুন।
- ডান পা ডান হাত দিয়ে এবং বাম পা বাম হাত দিয়ে মাসেহ করুন।
- হাতের আঙুলগুলো স্বাভাবিক ফাঁকা রেখে মাসেহ করুন।
মাসেহ বাতিল হওয়ার কারণ
- শরীয়ত নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলে।
- মোজা খুলে ফেললে।
- মোজা ছিঁড়ে গেলে বা ফেটে গেলে পায়ের তিন আঙুল পরিমাণ অংশ প্রকাশ পেলে।
- গোসল ফরজ হওয়ার প্রয়োজন হলে।
বুট জুতার উপর মাসেহ
বুট জুতার ক্ষেত্রে মাসেহ বৈধ। তবে তা মসজিদে ব্যবহার না করাই উত্তম।
কতজন পড়েছেন: ১৫