সৌদি আরবের শ্রমবাজারে কর্মসংস্থান বাড়ছে, যা বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে কেন্দ্র করে সৌদি আরবে অবকাঠামো নির্মাণে কর্মীর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর বিদেশে কর্মসংস্থানের প্রায় ৬০ শতাংশ এবং গত দুই মাসে ৮০ শতাংশের বেশি কর্মী সৌদি আরবে গেছেন।
সৌদি আরবে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সেখানে একজন কর্মী কেবল নিয়োগকর্তা বা কফিলের মাধ্যমে কাজ করতে পারেন। চাকরি পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে নিয়োগকর্তা ও সৌদি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন আবশ্যক। এই প্রক্রিয়ার বাইরে গেলে কর্মী অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হন।
বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বায়রার মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী জানান, সৌদি আরবের শ্রমবাজার ধরে রাখতে দুই দেশের মধ্যে কারিগরি আলোচনা জরুরি।
অভিবাসন খাতে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান রামরু বলছে, নির্দিষ্ট শ্রমবাজারের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা দীর্ঘমেয়াদে সমস্যার কারণ হতে পারে। অতীতে দেখা গেছে, কোনো একটি দেশে বিপুল কর্মী পাঠানোর পর সমস্যা তৈরি হলে সেই শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বাংলাদেশের শ্রমবাজার কয়েকটি নির্দিষ্ট দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানসচিব মো. রুহুল আমিন জানান, বাজার সম্প্রসারণে নিয়মিত উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ব্রুনেই, রাশিয়া ও মালয়েশিয়ায় নতুন করে শ্রমবাজার চালুর প্রক্রিয়া চলছে। দক্ষ কর্মীদের জন্য ইউরোপেও নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিবাসন প্রক্রিয়ায় বৈষম্য দূর করতে সরকারের নতুন নীতিমালা প্রয়োজন। কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে দূতাবাসের সত্যায়নের পরিবর্তে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে। এছাড়া প্রবাসীদের সেবা নিশ্চিত করতে শ্রম উইংয়ের কার্যক্রম আরও কার্যকর করতে হবে।
রামরুর প্রতিষ্ঠাতা তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, নির্দিষ্ট শ্রমবাজারের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং কর্মীদের চাকরি সুরক্ষিত করতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।
সৌদি আরবে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি একটি ইতিবাচক দিক হলেও এর টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকারের সক্রিয় উদ্যোগ ও নীতিমালা বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।