সিলেটের প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজারের আল-হামরা শপিং সিটির নুরানী জুয়েলার্সে চুরির ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) তৎপর হয়ে উঠেছে। চতুর্থ তলার দোকান থেকে প্রায় আড়াইশ ভরি স্বর্ণ চুরির এ ঘটনা শুধু দুঃসাহসিক নয়, বরং রহস্যে ঘেরা। চুরির প্রকৃত তথ্য উদঘাটনে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ও সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
বুধবার দিবাগত রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার মধ্যে আল-হামরা শপিং সিটির নুরানী জুয়েলার্স (দোকান নম্বর ৪৩১, ৪৩৩ ও ৪৩৫) থেকে স্বর্ণ চুরির এ ঘটনা ঘটে। চোরেরা দোকানে ঢুকে সিসিটিভি ডিভিআর (ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার) নিয়ে পালায় এবং দোকানের শাটারে নতুন তালা লাগিয়ে যায়। দোকানের স্বত্বাধিকারী দেওয়ান মো. জাবেদ চৌধুরী জানান, চুরির সময় তার দোকানে প্রায় আড়াইশ ভরি স্বর্ণ মজুদ ছিল, যা চোরেরা পুরোপুরি নিয়ে গেছে।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক বলেন, “ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে চুরির ঘটনা অত্যন্ত রহস্যজনক মনে হয়েছে। মার্কেটের সিসিটিভি ফুটেজসহ বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্র জানায়, দোকান সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাদের মোবাইল কললিস্ট পরীক্ষা করে চুরির সূত্র বের করার চেষ্টা চলছে। ডিভিআর চুরি হওয়ার কারণে সিসিটিভি ফুটেজ পুনরুদ্ধারে প্রযুক্তিগত সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।
দেওয়ান মো. জাবেদ চৌধুরী বলেন, “চোরেরা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজ করেছে। যাওয়ার সময় শাটারে নতুন তালা লাগিয়েছে, যাতে চুরির ঘটনা প্রথমে কেউ বুঝতে না পারে। দোকানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও চোরেরা এতটা নির্ভয়ে কাজ করেছে, যা আমাদের হতবাক করেছে।”
তবে ওসি জিয়াউল হকের ভাষ্যমতে, এখনও পর্যন্ত দোকানের মালিক পক্ষ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ বা মামলা দায়ের করা হয়নি। ফলে তদন্তে বিলম্ব হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ চুরির ধরন দেখে ধারণা করা হচ্ছে, অপরাধীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে কাজ করেছে এবং দোকানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়েও অবগত ছিল। মার্কেটের সিসিটিভি ও দোকানের ডিভিআর উভয় চুরি করায় তদন্ত আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
এ চুরির ঘটনায় আল-হামরা শপিং সিটির ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শপিং সিটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে এমন চুরি সংগঠিত হতে পারে।
পুলিশ আশা প্রকাশ করেছে, প্রযুক্তি ও তদন্ত দক্ষতার মাধ্যমে শিগগিরই চুরির রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
এ ঘটনায় সিলেটজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত লিখিত অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রমকে সহজ করতে দোকান মালিকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ।