সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক চারলেন প্রকল্প এক বছর ধরে আটকে আছে

  • বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২ সপ্তাহ আগে
  • Print

সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের সংকীর্ণতার কারণে প্রতিদিনই যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও এই মহাসড়কের চারলেন প্রকল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের তথ্যমতে, মহাসড়কের দুটি অংশ মিলিয়ে মোট ৫.৮ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীত করার দরপত্র ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আহ্বান করা হয়। দরপত্র প্রক্রিয়া সিলেট তত্ত্বাবধায়ক অফিস থেকে সম্পন্ন হলেও এটি যাচাইয়ের জন্য সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাওয়ার কথা থাকলেও এখনো সেটি অনুমোদনের জন্য অপেক্ষমান রয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলার ২৫ লাখ মানুষের চলাচলের প্রধান মাধ্যম এই মহাসড়ক। প্রতিদিন প্রায় ১২০০ বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, ট্রাকসহ পাঁচ হাজারেরও বেশি সিএনজি ও ছোট যানবাহন চলাচল করছে। কিন্তু সড়কটির উন্নয়ন কেবল জেলা শহরের ৩.৮ কিলোমিটার এবং শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের ২ কিলোমিটার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দীর্ঘ যানজটের ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন প্রকৌশলীর মতে, প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে। আলফাত স্কয়ার থেকে পৌর কলেজ এবং উজানীগাঁও থেকে সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দরপত্র গ্রহণ হলেও অনুমোদন আটকে থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হচ্ছে।

পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবহন মালিক সমিতির প্রায় ৫০০ গাড়ি এই রুটে চলাচল করে। এছাড়াও প্রতিদিন প্রায় ৮০টি আন্তঃজেলা বাস ও ১৫০টির বেশি দূরপাল্লার বাস এই সড়ক ব্যবহার করে। ২৪ ফুট প্রশস্ত এই মহাসড়ক এত যানবাহনের চাপ সামলাতে পারছে না, ফলে যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।

সিলেট-সুনামগঞ্জ রুটে যাতায়াতকারী তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি খসরুল আলম বলেন, “২০ বছর আগে বাসে ৬৫ কিলোমিটার পথ যেতে সোয়া ঘণ্টা লাগত, এখন পেঁৗনে দুই ঘণ্টা সময় লাগছে। যানবাহনের চাপ ও অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে এই সমস্যা হচ্ছে।”

জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া বলেন, “সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক দ্রুত চারলেন করা উচিত। পাশাপাশি সুনামগঞ্জ-পাগলা-আউশকান্দি সড়কের বিভিন্ন স্থানে চারলেন প্রকল্প বাস্তবায়ন জরুরি।”

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, “সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করছে। সরকারি ক্রয় কমিটিতে অনুমোদনের পরেই কাজ শুরু হবে।”

সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের চারলেন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন হলে জনদুর্ভোগ কমবে এবং যান চলাচল সহজ হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ আশা করছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবহন মালিকরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও নিউজ