
নিজস্ব প্রতিবেদক │ ঢাকা │ ১২ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ সুখবর জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ঘোষণায় বলা হয়েছে, স্টুডেন্ট ভিসা এভিডেন্সিয়ারি ফ্রেমওয়ার্কে (Student Visa Evidentiary Framework) বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো লেভেল–১ মর্যাদায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর ফলে এখন থেকে অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজ, দ্রুত ও কম ব্যয়বহুল হবে।
অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব হোম অ্যাফেয়ার্স মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানায়,
১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৫ সময়কালের ভিসা ফলাফলের ভিত্তিতে সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর এভিডেন্স লেভেল হালনাগাদ করা হয়েছে।
নতুন এ সিদ্ধান্ত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
এই প্রথম বাংলাদেশ লেভেল–১ মর্যাদা পেল, যা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার পথকে আরও উন্মুক্ত করে দেবে।
এর আগে বাংলাদেশ ছিল লেভেল–৩ শ্রেণিতে, যার ফলে ভিসা প্রক্রিয়ায় নানা জটিলতার মুখে পড়তে হতো।
অতিরিক্ত কাগজপত্র, আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ, ইংরেজি দক্ষতার সনদসহ একাধিক নথি জমা দিতে হতো।
এখন লেভেল–১ এ উন্নীত হওয়ায় আবেদনকারীরা তুলনামূলকভাবে কম নথি জমা দিয়েই দ্রুত সময়ে ভিসার সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন।
অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের শিক্ষার্থী ভিসা ব্যবস্থায় ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী দেশগুলোকে তিনটি স্তরে ভাগ করেছে—
লেভেল–১: নিম্ন ঝুঁকির দেশ
লেভেল–২: মাঝারি ঝুঁকির দেশ
লেভেল–৩: উচ্চ ঝুঁকির দেশ
ঝুঁকির মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয় সংশ্লিষ্ট দেশের শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের হার, অতিরিক্ত অবস্থান, জাল নথি জমা এবং ভিসা জালিয়াতির ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে।
নতুন তালিকায় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা লেভেল–১,
ভারত, নেপাল, চীন, ভুটান ও ভিয়েতনাম লেভেল–২,
আর ফিলিপাইন, ফিজি ও পাকিস্তান লেভেল–৩ এ রয়েছে।
এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রার্থীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে।
অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে দেশটির বাংলাদেশি শিক্ষা এজেন্সি ও কনসালটেন্সিগুলোর কাছে এ আপডেট পাঠিয়েছে।
শিক্ষা পরামর্শক ও অভিভাবকরা বলছেন,
“এটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন। লেভেল–১ মর্যাদায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এখন অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার সুযোগ আরও সহজলভ্য হবে এবং আবেদন প্রক্রিয়ায় সময় ও খরচ—দুটিই কমে আসবে।”
বাংলাদেশের শিক্ষা খাতের বিশেষজ্ঞরা অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
তারা মনে করছেন, এটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক পরিসরে মর্যাদা বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য উন্নত দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাতেও বাংলাদেশের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি করবে।