
২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ প্রথম রায় ঘোষণা করছে। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেবেন। রায় ঘোষণার অংশ বিশেষ ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
এই মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে—
১) শেখ হাসিনা, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী (পলাতক)
২) আসাদুজ্জামান খান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (পলাতক)
৩) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, তৎকালীন আইজিপি (গ্রেপ্তার; পরে রাজসাক্ষী)
আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে—
উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান
প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যা
চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা
আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা
চলতি মামলায় সাবেক আইজিপি মামুন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বলেন, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই “প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার”–সংক্রান্ত নির্দেশ তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে পেয়েছিলেন।
তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই–আগস্টে মারণাস্ত্র ব্যবহারে ১,৫০০ জন নিহত ও ৩০,000 জন আহত হন।
প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের আবেদন করেছে।
পলাতক থাকায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান আপিল করতে পারবেন না, যদি না তাঁরা আত্মসমর্পণ করেন বা গ্রেপ্তার হন।
দোষী সাব্যস্ত হলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের কাছে কনভিকশন ওয়ারেন্টসহ নতুন রেড নোটিশের আবেদন করা হবে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হয়।
১৭ অক্টোবর ২০২4 প্রথম মিসকেস থেকে যাত্রা শুরু।
৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষ করার পর ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক হয়।
অভিযোগ গঠন থেকে রায় পর্যন্ত সময় লেগেছে ৩৯৭ দিন।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চারটি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলমান—
১) জুলাই হত্যাকাণ্ড মামলা (আজ রায়)
২) ২০১৩ শাপলা চত্বরসহ হেফাজত দমন মামলা
৩–৪) আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গুম–নির্যাতন সংক্রান্ত দুটি মামলা
এ ছাড়া আদালত অবমাননার এক মামলায় ট্রাইব্যুনাল ২০২৫ সালের ২ জুলাই শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।