আগামী ৯ মে ইউক্রেন অভিযানে ইতি টানতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনে সেনার একটি সূত্র উদ্ধৃত করে শুক্রবার এই দাবি করেছে সে দেশের সংবাদপত্র ‘দ্য কিভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট’।
প্রকাশিত খবরে দাবি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির চূড়ান্ত পরাজয়ের পর ১৯৪৫ সালের ওই তারিখেই সরকারিভাবে সামরিক অভিযানে ইতি টেনেছিলেন অবিভক্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোশেফ স্টালিন। এখনও রাশিয়া জুড়ে ৯ মে উৎসব পালিত হয়। পুতিন এবার তাই স্টালিনের পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন।
এদিকে, গত মাসে আজকের দিনেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল রাশিয়া। এই এক মাসে কার্যত ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে গোটা দেশ। ভিন দেশে শরণার্থী লক্ষ লক্ষ ইউক্রেনীয়। দেশেই আশ্রয়হীন আরও বহু লক্ষ।
শুক্রবার পুতিনের সেনা অভিযানের ৩০তন দিনে ইউক্রেন দাবি করেছে রুশ হামলা এখন অসামরিক নাগরিক ও তাদের আশ্রয়কেন্দ্রের উপর। মানবতার শেষটুকুও তারা অবশিষ্ট রাখছেনা। তবে ইউক্রেন ফের দাবী করলো এ পর্যন্ত প্রতিরোধের লড়াইয়ে ১৫ হাজারেরও বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছেন। তাদের অনেকেরই দেহ ফিরিয়ে নিয়ে যায়নি পুতিন বাহিনী। সেগুলি পড়ে রয়েছে রাস্তাঘাটে। এছাড়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মস্কোর বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ‘ফসফরাস বোমা’ ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন।
এদিকে, শুক্রবার আল জাজিরা জানায় ইউক্রেনে অবশিষ্ট বৃহত্তম একটি জ্বালানি ভাণ্ডার ধ্বংসের দাবি করেছে রাশিয়া। রাশিয়া বলেছে, কালিবির ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তারা হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ২৪ মার্চ সন্ধ্যায় উচ্চ-নির্ভুল সমুদ্র-ভিত্তিক কালিবির ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে কিয়েভের কাছে কালিনিভকা গ্রামে একটি জ্বালানি ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। এটি ইউক্রেনের অবশিষ্ট বৃহত্তম জ্বালানি ভাণ্ডার স্থাপনার একটি। এখান থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে জ্বালানি সরবরাহ করা হতো।
এমন পরিস্থিতিতে গতকাল ইউক্রেন-পরিস্থিতি নিয়ে ন্যাটোর নেতৃবৃন্দ জরুরী বৈঠক বসেছিলেন বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে। বৈঠক শুরুর আগে ন্যাটোর সদস্যদের সামনে ভার্চুয়ালি উপস্থিত হন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বলেন, ‘রাশিয়া কোনও কিছু মানছে না। আরও সামরিক সাহায্য প্রয়োজন। আমাদের বাঁচান।’ জবাবে বৈঠকে অপ্রত্যাশিত কোনও পদক্ষেপ নেয়নি নেটো। ইউক্রেনে আরও সামরিক সাহায্য পাঠানোর কথা জানিয়েছে তারা। এবং সেই সঙ্গে ঘোষণা করেছে, জোটের অন্তর্ভূক্ত দেশগুলোকে রক্ষা করতে আরও একাট্টা ন্যাটো। এই বৈঠক শেষ হতেই বসেছে জি-৭-এর বৈঠক।