দেশের সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে পাবজি গেম বন্ধে আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে পাবজিসহ ক্ষতিকারক সব অনলাইন গেমস বন্ধে আদেশ বহাল থাকলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
পাবজির পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান প্রক্সিমা বেটা পিটিই লিমিটেডের করা আবেদন বুধবার (২০ এপ্রিল) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ খারিজ করে দেন।
আদালতে প্রক্সিমা বেটা পিটিই লিমিটেডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সামির সাত্তার। রিটকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব।
তিনি জানান, গত বছরের ১৬ আগস্ট দেশের বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে থাকা পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকারক সব গেম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরপর পাবজির পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান প্রক্সিমা বেটা পিটিই লিমিটেড আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করে। যেটি আজ খারিজ করে দেন। ফলে পাবজি গেমসহ ক্ষতিকারক সব অনলাইন গেমস বন্ধের নির্দেশ বহাল থাকলো।
এর আগে, এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর গত বছরের ১৬ আগস্ট দেশের বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে থাকা পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকারক সব গেম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরপর ২৫ আগষ্ট এসব গেমস বন্ধের খবর আসে।
গত বছরের ২৪ জুন মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে এ রিট করা হয়।
রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টরা।
আবেদনকারী আইনজীবী হুমায়ন কবিরের মতে, পাবজি এবং ফ্রি ফায়ারের মত গেমসগুলোতে দেশের যুব সমাজ এবং শিশু-কিশোররা ব্যাপকভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এর ফলে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি বিনষ্ট হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়ে পড়ছে মেধাহীন। এসব গেম যেন যুব সমাজকে সহিংসতা প্রশিক্ষণ দেওয়ার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে টিকটক, লাইকি অ্যাপগুলো ব্যবহার করে দেশের শিশু-কিশোর এবং যুব সমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে এবং সারা দেশে কিশোর গ্যাং কালচার তৈরি হচ্ছে। টিকটক অনুসারীরা বিভিন্ন গোপনীয় জায়গায় পুল পার্টির নামে অনৈতিক বিনোদন ও যৌন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। এছাড়া সম্প্রতি নারী পাচারের ঘটনা এবং বাংলাদেশ থেকে দেশের বাইরে অর্থ পাচারও টিকটক, লাইকি এবং বিগো লাইভের মাধ্যমে চলছে, যেটা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক এবং দেশ ও জনস্বার্থ পরিপন্থি, শৃঙ্খলা পরিপন্থি, মূল্যবোধ পরিপন্থি।