অপেক্ষা মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তারপরই খুলে দেওয়া হবে খরস্রোতা পদ্মার ওপর দাঁড়িয়ে থাকা ছয় দশমিক এক পাঁচ কিলোমিটারের দীর্ঘ সেতুটি। ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন পদ্মা সেতু। পরদিন (২৬ জুন) থেকে যান চলাচল শুরু হবে সেতু দিয়ে। এ দিন থেকে নির্ধারিত টোল দিয়ে সেতু পারাপার হবে সব ধরনের যান।
তবে প্রতিদিন কত সংখ্যক যান চলবে পদ্মা সেতু দিয়ে সে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানালেন সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, দৈনিক ৭৫ হাজার যানবাহন চলতে পারবে পদ্মা সেতু দিয়ে। সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সর্বোচ্চ মান বজায় রেখেই নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। এর মধ্যে কঠিনতম ভূমিকম্প মোকাবিলায় সব ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে সেতুতে। যা রিখটার স্কেলে প্রায় নয় মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল। সেতুতে ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং’র সক্ষমতা ১০ হাজার টন। এখন পর্যন্ত কোনো সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং লাগানো হয়নি।
চার হাজার ডেড ওয়েট টনেজ (ডিডব্লিউটি) ক্ষমতার জাহাজের ধাক্কা সামলাতে সক্ষম সেতুটি। জাহাজের ধাক্কা,মাটি সরে যাওয়া ও নয় মাত্রার ভূমিকম্প একসঙ্গে ঘটলেও সেতুর কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, পিলারের নকশা এমনভাবে করা হয়েছে যে, খরস্রোতা পদ্মায় ৬২ মিটার পর্যন্ত মাটি সরিয়ে নিয়ে গেলেও সেতুর কোনো সমস্যা হবে না।কারণ, মাটির ১২০-১২৭ মিটার গভীরে পাইল বসানো হয়েছে। পৃথিবীর অন্য কোনো সেতু তৈরিতে এত গভীরে পাইল বসানো হয়নি। যা বিশ্বে রেকর্ড।
শনিবার সকাল ১০টায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে সেতুর দুই প্রান্তে চলছে শেষ সময়ের ব্যস্ততা। চলছে অ্যাক্রোব্যাটিক শো’সহ বিভিন্ন আয়োজনের চূড়ান্ত মহড়া। যান চলাচলের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে গর্বের সেতু। উদ্বোধন ঘিরে মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরিয়তপুরসহ সারাদেশে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
স্বপ্নের সেতু উদ্বোধনকে স্মরণীয় করে রাখতে মাদারীপুরের শিবচরে বাংলাবাজার ফেরিঘাটে ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। পদ্মা সেতুর আদলে ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে ঘাট এলাকার প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সাত শতাধিক মাইক বসানো হয়েছে।