সুনামগঞ্জের আদালত পাড়ায় আসামীপক্ষের ছুরিকাঘাতে খোকন মিয়া (৪৫) নামের মামলার বাদী নিহতের ঘটনায় সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটককৃত তিনজনসহ পাঁচজনের রিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি করেছেন নিহতের বাবা ফটিক মিয়া।
মামলায় আসামি করা হয়েছে, আটককৃত গলাখাল গ্রামের মুহিবুর রহমানের ছেলে ফয়েজ আহমদ (৩০), আফরোজ মিয়ার ছেলে সাজিদ মিয়া (৩৪) ও সেবুল মিয়া (২৫) ও পলাতক থাকা একই গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে শাহান মিয়া (২৪), লাল মিয়ার ছেলে মো. ইসরাইল মিয়া (৩৫) কে।
এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে তিন জনকে আসামী করা হয়েছে। তবে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত মামলার পলাতক আসামী শাহান মিয়া ও ইসরাইল মিয়াকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে আটককৃত তিন আসামীকে শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জের সিনিয়র বাচারিক ম্যাজিস্ট্রেট মো. হেলাল উদ্দিনের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আটককৃত তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রত্যেককে পাঁচ দিন করে রিমাণ্ড চেয়েছেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার এসআই হাবিবুর রহমান। এদের মধ্যে মামলার প্রধান আসামি ফয়েজ আহমদ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জনাবন্দী দিয়েছে। অন্য দুই আসামীর রিমাণ্ড শুনানী হয়নি। রবিবার তাদের রিমাণ্ড শুনানীর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
পুলিশের সুনামগঞ্জ আদালত পরিদর্শক মো. বুরহান উদ্দিন বলেন, ‘খোকন মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক তিনজনকে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ৫ দিন করে রিমাণ্ড চেয়েছিলেন। প্রধান আসামী ফয়েজ আহমদ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। তবে দুই আসামীর রিমা- শুনানী অনুষ্ঠিত হয়নি। আদালত রবিবার রিমাণ্ড শুনানীর দিন ধার্য করেছেন।’
প্রসঙ্গত, বৃৃহস্পতিবার দুপুর পৌণে ১ টায় জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে প্রকাশ্যে দিবালোকে জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গলাখাল গ্রামের ফটিক মিয়ার ছেলে খোকন মিয়াকে ছুরিকাঘাতে খুন করে একই গ্রামের প্রতিপক্ষরা। ঘটনায় জড়িত ফয়েজ আহমদ, সাজিদ মিয়া ও সেবুল মিয়াকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন উপস্থিত লোকজন, আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীরা।
জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নিহত খোকন মিয়া ও তার চাচাতো ভাই মাসুক মিয়ার সাথে খুনের ঘটনায় জড়িত আটক তিন জনসহ চার যুবকের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক মামলা চলছিল। খোকন মিয়ার চাচাতো ভাই মাসুক মিয়ার (নন জিআর ১৬৬/২২) মামলার আসামী ফয়েজ আহমদ, সাজিদ মিয়া, সেবুল মিয়া ও শাহান মিয়া। মামলার কাজে চাচাতো ভাই মাসুক মিয়ার সাথে বৃৃহস্পতিবার আদালতে এসেছিলেন (সিআর ৭২/২২) মামলার বাদী খোকন মিয়া। মাসুক মিয়ার মামলার হাজিরা শেষে দুপুর পৌণে ১টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির সামনে সিআর মামলার বাদী খোকনকে একা পেয়ে আসামী ফয়েজ, সাজিদ, শাহান ও সেবুল উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে।
বিষয়টি দেখে উপস্থিত লোকজন, আইনজীবী ও তাদের সহকারীরা এগিয়ে গিয়ে ফয়েজ, সাজিদ ও সেবুলকে ধরে আইনজীবী সমিতি ভবনে আটকে রাখেন। এরপর আটক তিনজনকে ধারালো ছুরিসহ পুলিশে সোপর্দ করা হয়।