সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমদ খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সকালে তাদের আটক করা হয় জানিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের বলেন, ‘আটকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
তবে তাদের নাম প্রকাশে অপারাগতা প্রকাশ করে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি একটি স্পর্শকাতর মামলা। তাই এখনই তাদের নাম আমরা প্রকাশ করতে চাচ্ছি না।’
এই হত্যার ঘটনায় সোমবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হক জালালাবাদ থানায় মামলা করেন।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান বলেন, মামলায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
বুলবুল হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবারও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে সোমবার মধ্যরাতে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
রাত সাড়ে ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে প্রায় আধাঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে উপাচার্যের আশ্বাসে তা প্রত্যাহার করা হয়।
এই হত্যার প্রতিবাদে রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাসের ভেতরে এমন ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ক্যাম্পাসের ভেতরে এমন ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। আমি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাই।’
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ক্যাম্পাসের ভেতরে গাজীকালুর টিলায় বুলবুল আহমেদের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে অন্য শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে খবর দেন।
পরে গুরুতর অবস্থায় বুলবুলকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বুলবুলের বাড়ি নরসিংদী জেলায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী।
বুলবুলের সহপাঠী অমিত ভৌমিক জানান, সন্ধ্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীকালুর টিলায় বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করা হয়। হামলাকারীরা ছিনতাইকারী হতে পারে বলে ধারণা অমিতের।
তবে খুনিদের চিহ্নিত করা যায়নি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আবু হেনা পহিল বলেন, ‘পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত করছে। আশা করছি দ্রুত সময়ে খুনিরা গ্রেপ্তার হবে।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আহত অবস্থায় বুলবুলকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে নেয়া হয়। কিন্তু রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় তাকে ওসমানী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’