শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ছাত্র বুলবুল আহমদ (২২) খুনের ঘটনায় এবার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন কামরুল আহমদ (২৯) ও মো. হাসান। তারা হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বিকেল ৩টায় তাদের সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালতের বিচারক মো. সুমন ভূঁইয়া বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আদালত সূত্র জানায়, এ দুই আসামি হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দেন। জানান, ক্যাম্পাসের গাজিকালু টিলায় বুলবুল ও তার বান্ধবীকে নির্জনে পেয়ে আক্রমণ করেন। এসময় বুলবুল ধস্তাধস্তি করলে তার বুকে, পিঠে ও বাহুতে ছুরিকাঘাত করে তারা পালিয়ে যান। এরপর আবুল হোসেনকে (১৯) পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে তাদেরকেও গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসএমপির জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ দেব বলেন, হত্যার ঘটনায় আসামিরা নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। জবানবন্দি গ্রহণের পর বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, এর আগে বুধবার (২৭ জুলাই) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মামলার আরকে আসামি আবুল হোসেন একই আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এনিয়ে গ্রেফতারকৃত ৩ আসামি আদালতে বুলবুল হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, বুলবুল হত্যার ঘটনায় মোট ৫ জনকে আটক করা হয়। ঘটনার পরপরই মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) ভোররাতে ৩ জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন-ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন টিলারগাঁও এলাকার বাসিন্দা বরিশাল জেলার বাঘাইল আটগল জারা গ্রামের জিন্নাত আলী মৃধার ছেলে ইব্রাহিম খলিল (২৭), টিলারগাঁওয়ের লিলু মিয়ার ছেলে শরিফ (১৮) ও একই এলাকার আনিছ আলীর ছেলে আবুল হোসেন (১৯)।
তাদের মধ্যে আবুল হোসেন বুধবার রাতে পুলিশের কাছে হত্যার বর্ণনা দেন এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত টিলারগাঁও এলাকার গোলাব আহমদের ছেলে কামরুল আহমদ (২৯) ও একই এলাকার মৃত তছির আলীর ছেলে মো. হাসানকে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া পূর্বে আটক শরীফ ও ইব্রাহিমের হত্যায় কোনো সংশ্লিষ্টতা না পওয়ায় তাদের অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেবেন বলে জানান এসএমপির উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
তিনি বলেন, বুলবুল হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে মঙ্গলবার জালালাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর গ্রেফতারকৃতদের নিয়ে বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। তাতে বলা হয়, ছিনতাই করতে গিয়ে বুলবুলকে খুন করা হয়। তার সঙ্গে থাকা বান্ধবী মর্জিয়া আক্তার ঊর্মি নির্দোষ।
এর আগে গত সোমবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে গাজীকালুর টিলায় বান্ধবীসহ বেড়াতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে খুন হন শাবির লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ (২২)। তার বাড়ি নরসিংদী সদরের নন্দীপাড়া গ্রামে। বাবার নাম ওয়াব মিয়া। বুলবুল শাবির শাহপরান হলের ২১৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন।