ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট এফেয়ার্স আইডিয়া‘র উদ্যোগে, এডুকো বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় এবং চাইল্ড ফান্ড কোরিয়ের অর্থায়নে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আলোয়-আলো প্রকল্পের সংযুক্ত ওয়াশ প্রকল্পের শেয়ারিং মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।
আইডিয়া‘র নির্বাহী পরিচালক নজমুল হক এর সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: আবদুল হক।
আইডিয়া‘র সহকারি পরিচালক নাজিম আহমেদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, এডুকো বাংলাদেশের ডিরেক্টর, প্রোগ্রাম সাপোর্ট মো: নিজাম উদ্দিন এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: শামসুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো: আবদুল হক বলেন, চা-বাগান এলাকায় পানির সুবিধা অন্যান্য এলাকার তুলনায় খুবই খারাপ অবস্থায়। চা-বাগান এলাকার সুবিধা বঞ্চিত মানুষ প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করে জীবন যাপন করে। এ ধরনের এলাকায় ওয়াশ প্রকল্পের কার্যক্রম আসলেই প্রশংসার দাবীদার। সেই সাথে গভীর নলকুপ স্থাপনের পাশাপাশি পানির সাঠিক ব্যবহার ও অপচয় রোধে এবং যথাযথ রক্ষনাবেক্ষনের প্রতি ওয়াশ প্রকল্পে সদয় দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে তবে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় পানির সমস্যা অনেকাংশে সমাধান করা সম্ভব হবে।
এডুকো বাংলাদেশ এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এডুকো বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম সাপোর্ট ডিরেক্টর মো: নিজাম উদ্দিন বলেন, যেকোন সামাজিক ব্যধিকে যদি সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া যায় তাহলে বড় ধরণের সমস্যা সমাধান করা সহজ হয়। তিনি ওয়াশ প্রকল্পে কার্যক্রম এর পাশাপাশি আলোয়-আলো প্রকল্পের কার্যক্রমে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: শামসুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, আইডিয়া আলোয়-আলো প্রকল্পের পাশাপাশি ওয়াশ প্রকল্প যে ধরণের কাজ নিয়ে আসছে তাতে শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন এর চাহিদা পুরন করা সম্ভব হবে। তিনি স্কুল ও কমিউিনিটিতে গভীর নলকুপ স্থাপনের ক্ষেত্রে সুবিধা বঞ্চিত বিদ্যালয় ও কমিনিটিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচনের অনুরোধ জানান।
আলোয়-আলো প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শরিফুল আলম বলেন, ওয়াশ প্রকল্পের মাধ্যমে যেসকল গভীর নলকুপ স্থাপন করা হবে যেগুলো শুধুমাত্র স্থাপনের উদ্দেশ্যে নয় এগুলো যেন সঠিকভাবে ব্যবহার হয় সেজন্য কমিউনিটি পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এ কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। এছাড়াও উক্ত টিউবওয়েলের মাধ্যমে শতভাগ নিরাপদ পানি সরবারহের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন শরিফুল আলম।
প্রকল্পের কার্যক্রম উপস্থাপনায় আইডিয়া আলোয়-আলো প্রকল্পের সমন্বয়কারী মোহা. আমিনুর রহমান বলেন, বিদ্যালয় ও কমিউনিটি পর্যায়ে সার্ভের মাধ্যমে চাহিদা নিরুপন করা হয় এবং সম্ভাব্য জায়গাগুলোর টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভিত্তিতে টিউবওয়েল স্থাপনের জায়গা নির্বাচন করা হয়। তিনি আরও বলেন, টিউবওয়েল স্থাপনের পরবর্তীতে আবারও স্পাপিত টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে এবং টিউবওয়েল ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে স্থায়িত্বশীল ও সঠিব ব্যবহারের জন্য প্রয়েজণীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আইডিয়া‘র নির্বাহী পরিচালক নজমুল হক বলেন, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ২৫ টি গভীর নলকুপ উক্ত এলাকার চাহিদার তুলনায় যদিও কম তবে এ কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের পাশাপাশি সুবিধা বঞ্চিত কমিউনিটিতে পানির চাহিদা পুরনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি আরও বলেন, আইডিয়া চা-বাগান এলাকায় বিগত অনেক বছর ধরে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের বিষয়ে কাজ করে আসছে।
উক্ত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলার উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: জাফর আল-সাদেক, শ্রীমঙ্গল উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দীলিপ কুমার বর্ধন, কমলগঞ্জ উপজেলার উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সাইফুল ইসলাম তালুকদার, মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান মো: আসিদ আলী, রাজঘাট ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান বাবু বিজয় বুনার্জী, সিন্দুরখাঁন ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান, ইয়াসির আরাফাত রবিন, ম্যাক বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস. এ হামিদ, পাত্রখোলা চা-বাগান বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক, প্রদিপ পাল, গান্ধিছড়া বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক, ঝর্না দেবনাথ, টিপরাছড়া চা-বাগান এর পঞ্চায়েত সভাপতি কমল বোনার্জী ও এসএমসি সভাপতি আ. ছ. ম মুজিবুর রহমান প্রমূখ।
প্রকল্পের কার্যক্রম বিষয় উপস্থাপন করেন আলোয়-আলো প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মোহা. আমিনুর রহমান। বিজ্ঞপ্তি