বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:
বড়লেখায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পুলিশের কাজে বাধা ও সরকারি স্থাপনা ভাঙচুরের অভিযোগ এনে দুই সাংবাদিকসহ ৩ জনের নামোল্লেখ এবং ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ ) দুপুরে পুলিশের এএসআই তরুণ চক্রবর্তী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় লাতু এক্সপ্রেস’র সম্পাদক দেলোয়ার হোসাইনকে প্রধান আসামি ও তার ভাই মোক্তার হোসাইনকে ২য় এবং একাত্তর টিভির উপজেলা প্রতিনিধি এ.জে লাভলুকে ৩য় আসামি করা হয়। এই মামলায় অজ্ঞাত আরোও ২০জনকেও আসামি করা হয়।
এদিকে মামলার পর ১৯ মার্চ রাতেই দেলোয়ার হোসাইন, তার ভাই মোক্তার হোসাইন এবং সাংবাদিক এ.জে লাভলুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া পৃথকস্থান থেকে বিরোধীদলের আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে স্বীকার করলেও তাদের নাম পরিচয় জানাতে অস্বীকৃতি জানায় পুলিশ।
এদিকে দুই সাংবাদিকসহ গ্রেপ্তারকৃতদের রাতভর থানায় নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। আজ ২০ মার্চ সকালে তাদেরকে আদালতে হাজির করার সময় তারা খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটতে দেখা গেছে। পরে আদালতে দুই সাংবাদিকসহ ৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে নির্বাচনের দিন ছাত্রলীগের হামলায় আহত দুই সাংবাদিককে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সর্বত্র সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা দ্রুত দুই সাংবাদিককে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন।
বড়লেখা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোপাল দত্ত বলেন, নির্বাচনের দিন জাল ভোটের খবর পেয়ে সাংবাদিক দেলোয়ার হোসাইন ও এ.জে লাভলু ভোট কেন্দ্রে গেলে তাদেরকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। উল্টো খারাপ ব্যবহার করেছে। পরে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা তাদের ওপর হামলা করেছে। এখন উল্টো তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা ও সরকারি স্থাপনা ভাঙচুরের অভিযোগে এনে মামলা করা হয়েছে।
গোপাল দত্ত আরো বলেন, রাতে থানায় তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। সকালে আদালতে তারা খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছিলেন। সাংবাদিক দেলোয়ার হোসাইন ও এ.জে লাভলুর ওপর হামলার ঘটনায় আমরা থানায় মামলা করতে গিয়েছিলাম। পুলিশ মামলা নিল না, তারা উল্টো মিথ্যে মামলা দিয়ে নিরপরাধ সাংবাদিকদের জেলে পাঠিয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা সুষ্ঠু বিচারের দাবি তুলেন এই সাংবাদিক নেতা।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘পুলিশের কাজে বাধা ও সরকারি স্থাপনা ভাঙচুরের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা করা হয়েছে। দুই সাংবাদিকসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
এ ঘটনায় এক সাংবাদিকের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করতে গেলে মামলা গ্রহণ করা হয়নি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে থানায় এসে কেউ অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’