বড়লেখা প্রতিনিধি:
‘লাতু এক্সপ্রেস’র সম্পাদক দেলোয়ার হোসাইনের উপর হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে তার ওপর এই হামলা চালানো হয়।
হামলায় গুরতর আহত সাংবদিক দেলোয়ার হোসাইনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। দেলোয়ার হোসাইন মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউপির কুমারশাইল গ্রামের মো.আব্দুল মতিনের ছেলে।
অভিযোগ উঠেছে, উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন ও তার ভাই আহমেদ শরীফ দেলোয়ারের ইন্দনে পোষ্য সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে।
এদিকে দেলোয়ার হোসাইনের উপর হামলার খবর পেয়ে তাকে দেখতে বড়লেখা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে ছুটে যান।
জানা গেছে ১৬ এপ্রিল বিকেলে পেশাগত কাজে দেলোয়ার হোসাইন মোটরসাইকেলযোগে বড়লেখা শহরে যাচ্ছিলেন। শাহবাজপুর মধ্য বাজারে (ইউনিয়ন পরিষদের সামনে) পৌছালেই ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন ও তার ভাই আহমেদ শরীফের পোষ্য জাফর, হাসান, জাকারিয়া, জাকের, জাহিদসহ কতিপয় সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রসহ দেলোয়ার হোসাইনের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করা হয়।
হামলায় আহত সাংবাদিক দেলোয়ার হোসাইন জানান, চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন ও তাঁর ভাই আহমেদ শরীফের দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করায় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়েছে। যদি স্থানীয়রা এগিয়ে না আসতেন তাহলে তারা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলতো।
বড়লেখা প্রেসক্লাবের সভাপতি অসিত রঞ্জন দাস ও সাধারণ সম্পাদক গোপাল দত্ত এ প্রতিবেদককে বলেন, সাংবাদিক দেলোয়ার হোসাইন অন্যায়ের প্রতিবাদে এক দীপ্ত সৈনিক। দীর্ঘদিন ধরে প্রভাশালীদের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে পত্রপত্রিকায় লিখে আসছেন। ফলে প্রভাবশালীরা তার উপর ক্ষেপেছে। এর আগেও তাকে হুমকি দেয়া হয়েছিলো। প্রাণে মারার জন্যই আজকে তার উপর হামলা করা হয়েছে।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হামলার ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানও জড়িত আছেন বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। দেখি পুলিশ কী ব্যবস্থা নেয়।
অভিযোগের বিষয়ে উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন বলেন, সাংবাদিক দেলোয়ারের উপর হামলার ঘটনা শোনেছি। কিন্তু এই ঘটনার সাথে আমাকে ও আমার ভাইকে জড়ানোটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়াছিনুল হক মুঠোফোনে বলেন, দেলোয়ার হোসাইনের ওপর হামলার খবর জেনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শাহবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গেট সংলগ্ন টিলা ও একাধিক গাছ কেটে মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন। আর সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজটি দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কোনো প্রকার দরপত্র আহবান ছাড়াই অবৈধভাবে তার নিজের ভাইকে পাইয়ে দেন। এতে করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়।
গাছগুলো না কাটতে পরিবেশকর্মীরাও প্রতিবাদ জানান। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠান প্রধান এসব তোয়াক্কা না করেই কাজ অব্যাহত রাখেন। এ ঘটনা নিয়ে গত ১৩ এপ্রিল ‘লাতু এক্সপ্রেস’ -এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর পরই প্রতিশোধপরায়ন হয়ে ওঠেন ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন গংরা।