সিলেটের কৃতিসন্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি। তিনি একজন সফল কূটনীতিবিদ ও সহজ-সরল মানুষ। সিলেটের উন্নয়নে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে নিজের প্রয়াত সহোদর সফল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মতো কাজ করে যাচ্ছেন।
তবে মন্ত্রীর এক বক্তব্য নিয়ে সিলেটসহ সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছেন। চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর এক অনুষ্ঠানে আলোকিত সিলেটের স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মোমেন বলেছেন- ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছি।’
এ বক্তব্যের পর ড. মোমেনকে নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়। ব্যাপক সমালোচনার পর ড. মোমেন সেই বক্তব্যের ব্যাখ্যা করেন। ব্যাখ্যায় তিনি বলেন- ‘আমি বলেছি, কিছু কিছু লোক সময় সময় অনেক উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে। আপনার দেশেও কিছু দুষ্টু লোক আছে, আমার দেশেও দুষ্টু লোক আছে। তারা তিলকে তাল করে। আপনার সরকারের একটা দায়িত্ব হবে এবং আমার সরকারেরও দায়িত্ব আছে যে তিলকে তাল করার সুযোগ সৃষ্টি না করে দেওয়া। আমরা যদি এটা করি তাহলে সম্প্রীতি থাকবে। আমাদের মধ্যে কোনো ধরনের অস্থিরতা থাকবে না। আমি বলেছি, আমরা চাই শেখ হাসিনার স্থিতিশীলতা থাকুক। এই ব্যাপারে আপনার সাহায্য করলে আমরা খুব খুশি হবো।’
সিলেটবাসীর অহংকার- আলোকিত সিলেটের স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মোমেনকে নিয়ে সমালোচনা ও আলোচনার সৃষ্টি হলে ফুঁসে উঠেন সিলেটের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এমন কয়েকজন রাজনীতিবিদ নেতৃবৃন্দ ও সচেতন মহলের ব্যক্তিবর্গ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া ‘পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
ট্রাভেল এজেন্সির সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্সিজ অব বাংলাদেশের (আটাব), সিলেটের সাবেক সভাপতি ও সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাসের সহসভাপতি মো. আবদুল জব্বার জলিল ফেসবুকে লিখেন- ‘মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন একজন সাদামনের মানুষ। বৈদেশিক সম্পর্ক সৃষ্টি এবং করোনা মহামারির সময় ভ্যাকসিন সংগ্রহসহ নাগরিকদের সুরক্ষায় উন্নত বিশ্বের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো রাখার প্রচেষ্টায় উনার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। যুক্তিসংগত ও সঠিক কথা বলার মানসিকতা উনার মধ্যে রয়েছে কিন্তু একটি মহল উনার বক্তব্যকে বিকৃত করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে। সিলেটের একটি সুনামধন্য পরিবারের সদস্য মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে বিকৃত বক্তব্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়।’
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আফসর আহমদ লিখেন- ‘সাদামাটা, সহজ সরল পরোপকারী এই মানুষের জন্য অনেক দোয়া রইল। মিডিয়া যেভাবে উনাকে কুলষিত করতেছে তার জন্য তীব্র নিন্দা জানাই।’
সিলেট মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা আলম খান মুক্তি লিখেন- ‘সিলেট বাসীর গর্ব, সিলেটের কৃতি সন্তান, সিলেটের উন্নয়নের রূপকার, যিনি সাবেক জাতি সংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি হয়ে বাংলাদেশ ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছিলেন বিশিষ্ট কূটনীতিবিদ, একজন কর্মঠ নিষ্ঠাবান আদর্শবান সাদা মনের মানুষ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য সততা নিষ্ঠার সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্র নায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত পদ প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সিলেটের মাটি ও মানুষের নেতা আলোকিত সিলেটের স্বপ্নদ্রষ্টা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমার পরম শ্রদ্ধাভাজন অভিভাবক জননেতা ড. একে আবদুল মোমেন এমপি মহোদয় আপনি আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য সিলেটবাসী ধন্য।’
সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য হিরণ মাহমুদ নিপু লিখেন- ‘মোমেন সাবকে নিয়ে মন্তব্য করার আগে আয়নায় নিজের চেহারা দেখার অনুরোধ করছি। মোমেন সাহেবরা মন্ত্রিত্বের পরোয়া করেনা। দেশ, দেশের জনগণ এবং শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভাবে। মোমেন সাবেরা মন্ত্রণালয় খোঁজেন না; মন্ত্রণালয় মোমেন সাবদের খোঁজে।
সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ইকলাল আহমদ লিখেন- ‘ভারত আমাদের বৃহত্তম প্রতিবেশী। ভারতকে এড়িয়ে বাংলাদেশের একলা চলার কোন সুযোগ নাই। কারণটা ভৌগোলিক। মোমেন সাহেব (মন্ত্রী মহোদয়) সহজ সরল মানুষ, সরল ভাবেই কথা টা বলেছেন। ভারতের সাথে লবিং করেনা এমন কোন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে নাই। এটা নিয়ে ট্রল করার কোন মানে দেখিনা আমি। বিশ্বায়নের এ যুগে শুধু ভারত কেন অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী সকল দেশের সাথেই লবিং করতে হয়।’