জগন্নাথপুরে প্রবাসী দুই বোনের বাড়ী দখল, চাঁদা দাবি ও লুটপাটের অভিযোগ

  • বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: ৩ জুন ২০২৩, ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২ বছর আগে
  • Print

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এক প্রবাসীর বাড়ী দখল, চাঁদা দাবি, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে অবসরপ্রাপ্ত কাস্টম কর্মকর্তা আবু লেইছ এর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বাড়িটি তার এক নিকট আত্মীয়ের বলে দাবি করেছেন সাবেক এই কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায় জগন্নাথপুর পৌরসভার হবিবপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত মনাফর আলী ওরফে সফর আলীর উত্তরাধিকারীরা অধিকাংশই যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন।

তাঁদের মধ্যে অনেকেই দেশ মাতৃকার টানে মাঝে মধ্য দেশে আসেন।

গত ১৬ এপ্রিল মরহুম সফর আলীর বড় ছেলে মরহুম জবর আলীর মেয়ে মোছা: শিবলী বেগম যুক্তরাজ্য থেকে দেশে বেড়াতে আসেন। দেশে এসেই তিনি তার দাদার বাড়িতে ওঠেন।

খোজ নিয়ে জানা যায় শিবলী বেগমের বড় ভাই আব্দুন নূরের শশুর বাড়ীর লোক হলেন আবুলেইছ। সেই সুবাদে ভুক্তভোগীদের এই বাড়িটি অভিযুক্ত আবুলেইছ মাঝে মধ্যে দেখাশোনা করতেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায় ভুক্তভোগী মোছা: শিবলী বেগম দেশে আসার কয়েকদিন পর গত ২৮ এপ্রিল জগন্নাথপুর পৌরসভার ইসহাকপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত এখলাছুর রহমানের ছেলে
সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা মোঃ আবু লেইছের নেতৃত্বে হবিবপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার আজিদ মিয়াসহ একদল সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র দা এবং লাটি সোটা নিয়ে ওই বাড়িটি দখলের অপচেষ্টায় হামলা চালায়। এসময় তারা শিবলী বেগমের কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে তারা চাঁদা না পেয়ে আলমারির তালা ভেঙ্গে মূল্যবান দলিলপত্র
ও ৫ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও নগদ দুই লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিবলী বেগমের চাচাতো বোন হবিবপুর পশ্চিম পাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত ওয়ারিছ আলীর মেয়ে মোছা: রাশিদা বেগম বাদী হয়ে গত ২ মে ইছহাকপুর গ্রামের মৃত এখলাছুর রহমানের ছেলে সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা মোঃ আবুলেইছ ও হবিবপুর গ্রামের মৃত শফিক মিয়ার ছেলে আজিদ মিয়াকে আসামী করে সুনামগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লুটপাট ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জগন্নাথপুর থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেন।

মামলার বাদী রাশিদা বেগম বলেন, আবু লেইছ আমাদের দাদার এ বাড়িটি দখলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অনেক চেষ্টা করছে।
ঘটনার দিন তাঁরা আমার প্রবাসী বোনের পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ দুই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে অন্য আরেকদিন আমাদের অনুপস্থিতিতে আবু লেইছ তাঁর বাহিনী নিয়ে জোরপূর্বক বাড়িটিকে তালাবদ্ধ করে চলে যায়। বর্তমানে বাড়িটি আবুলেইছের দখলে রয়েছে।

এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোছাঃ শিবলী বেগম বলেন, দেশে আসার পর আবু লেইছ আমার কাছে কয়েক দফা পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।
চাঁদা না পেয়ে সে আমাদের বাড়িটিকে তালাবদ্ধ করে রেখেছে। তিনি আরো বলেন এটি আমাদের দাদার রেখে যাওয়া স্মৃতি। দাদার এই সম্পত্তি আমাদের মধ্যে এখনো ভাগ-বাঁটোয়ারা হয়নি। আমরা সবাই যুক্তরাজ্যে থাকি। বাড়িটি আমার বড় ভাই আব্দুন নুর দেখভাল করতেন। দেশে আসলে আমরা এই বাড়িতেই থাকি।

দাদা মারা যাওয়ার পর বাড়িটি তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকতো। সেই সুযোগে বাড়িটি দখলের জন্য আবু লেইছ দীর্ঘদিন ধরে অপচেষ্টায় রয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবু লেইছের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বাড়িটি আমার বোন জামাই আব্দুল নুরের। তিনি মারা গেছেন এবং আমার ভাগনা-ভাগনি সবাই দেশের বাইরে থাকেন। তাদের কথায় মাঝেমধ্যে ওই বাড়িতে যাই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ গুলি সত্য নয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই শামছুল আরেফিন বলেন, বর্তমানে মামলাটি তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে প্রকৃত রহস্য জানা যাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও নিউজ