চিত্রনায়ক শরিফুল রাজ কিছুদিন ধরে ‘ওমর’ নামে নতুন একটি ছবির শুটিং করছিলেন। এদিকে পরীমনিও নতুন দুটি ওয়েব ফিল্ম এবং একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য খবরে এসেছিলেন। কোনোটিতে এরই মধ্যে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন, আর কোনোটিতে কয়েক দিনের মধ্যে হবেন। দুজনই যখন পেশাগত কাজের খবরে ভক্তদের আলোচনায়, ঠিক তখনই আবারও ব্যক্তিগত কারণে খবরের শিরোনাম হলেন তাঁরা। আজ বুধবার সকালে দুজনের মধ্যকার আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদের প্রাথমিক প্রক্রিয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। ১৮ সেপ্টেম্বর রাজের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে তালাকের নোটিশ ইস্যু করেছেন পরীমনি।
চিত্রনায়ক শরিফুল রাজের সঙ্গে সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক ইতি টানার ইঙ্গিত বেশ কিছুদিন ধরেই দিচ্ছিলেন পরীমনি। অবশেষে আজ তার প্রাথমিক প্রক্রিয়া পরীমনি না জানালেও সেটি প্রকাশ্যে এসেছে। এদিকে বিচ্ছেদের বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে পরীমনি বা রাজ কেউই আজ বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত কোনো কথা বলেননি।
ঢাকার উত্তর বাড্ডার একটি কাজী অফিস থেকে শরিফুল রাজের প্রতি তালাকের নোটিশ ইস্যু করেন পরীমনি। ১৮ সেপ্টেম্বর ইস্যু করা সেই নোটিশে পরীমনি বিচ্ছেদের জন্য চারটি কারণের কথা উল্লেখ করেছেন। এসব কারণের মধ্যে শুরুতেই আছে মনের অমিল হওয়া। এরপর আরও তিনটি কারণের মধ্যে বনিবনা না হওয়া, খোঁজখবর না নেওয়া এবং মানসিক অশান্তি সৃষ্টি করাকে উল্লেখ করেছেন পরীমনি।
২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি প্রকাশ্যে আসে রাজ-পরীর সম্পর্কের খবর। পরীমনির পক্ষ থেকে ইস্যু করা তালাক নোটিশ ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর তাঁদের বিয়ে নিবন্ধিত হয়। দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ১০১ টাকার দেনমোহরে ঘরোয়া আয়োজনে তাঁদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। তার আগে হয় তাঁদের গায়েহলুদের অনুষ্ঠানও।
পরীমনি ও রাজের সংসারে শাহীম মাহমুদ রাজ্য নামের ১৪ মাস বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। দেড় বছরের দাম্পত্য জীবনে নানা ঘটনা আলোচনায় এসেছে পরীমনি ও রাজের সংসার। কখনো বিদ্যা সিনহা মিম, কখনো সুনেরাহ বিনতে কামালসহ অন্য কাউকে ঘিরে রাজের প্রতি সন্দেহের তির ছুড়েছেন পরীমনি। এসব নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি।
গত ২০ মে তো পরীমনির বাসা থেকে নিজের জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে আসেন রাজ। এরপর ২৯ মে রাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সুনেরাহ, তানজিন তিশা ও নাজিফা তুষির সঙ্গে বেশ কিছু ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ফাঁস হয়। সেই ঘটনায় দুজনের মধ্যকার সম্পর্কে আরও দূরত্ব তৈরি হয়। দুজন প্রথম আলোর ফেসবুক লাইভে এসেও সম্পর্কের তিক্ততা নিয়ে কথা বলেছেন। সে সময় অনেক সমস্যার পরও রাজের সঙ্গে সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানান পরীমনি।
পরীমনি বলেন, সংসারজীবনের এ অশান্তি এবং এই ব্লেম গেম থেকে পরিত্রাণ চান তিনি। পরীমনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘আজ থেকে আমি রাজের বউ নই। আমি এই সম্পর্ক টেনে নিতে চাই না।’ আলাদা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তাঁর আরও বক্তব্য, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই সমস্যা হচ্ছিল। সমস্যা কাটিয়ে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করেছি, পারলাম না। তাঁর আচার-আচরণ একসঙ্গে থাকার পরিস্থিতিতে নেই। তাই বাধ্য হয়ে বাসা ছেড়ে আলাদা হয়ে গেলাম। আমার মন–মানসিকতা এখন ভালো নেই, এর বেশি আর কিছু বলতে পারছি না।’
প্রথম আলোর কাছে আফসোস করে ‘পরাণ’খ্যাত অভিনেতা রাজ বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হতেই পারে এবং আমাদের মধ্যে কোনো কিছু ঘটলে, যখনই ঠিক করতে যাই, তখনই চারপাশ থেকে কোনো না কোনো একটা ক্যাচাল বা কোনো ইস্যু তৈরি করা হয়। আমি বিষয়টি নিয়ে খুবই বিরক্ত। সবকিছুর সমাধান হওয়া দরকার, শেষ হওয়া দরকার।’ রাজের ভাষ্য, ‘আমার মনে হয়, আমার চারপাশের কিছু মানুষ এই সব বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন, ছড়াচ্ছেন। মনে হচ্ছে, তাঁরা ভালো চান না, তাঁরা আমাদের ভালো থাকতে দেবেন না।’
১০ আগস্ট ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে কাছের মানুষদের নিয়ে একমাত্র সন্তানের প্রথম জন্মদিন উদ্যাপন করেন পরীমনি। রাজ্যর প্রথম জন্মদিনের আয়োজনেও দেখা যায়নি বাবা শরীফুল রাজকে।