২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রীদের বিষয়ে এমন একটি সিদ্ধান্তের কথা সামনে আসে। তখন বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। পরে এই নিয়ম বাতিল করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ
বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। বিশ্ববিদ্যালয়টি বলছে, হলের আবাসিকতা পাওয়ার শর্ত অনুযায়ী বিবাহিত ছাত্রীদের আসন পাওয়ার সুযোগ নেই।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জবির ছাত্রীদের একমাত্র আবাসিক হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ দীপিকা রাণী সরকারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আবাসিক ছাত্রীদের যাদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে, তারা অতি দ্রুত হল ত্যাগ করবে। কোনো মানোন্নয়ন (মাস্টার্স) পরীক্ষার্থী, এম.ফিল ছাত্রী হলে থাকতে পারবে না। এছাড়া আবাসিকতা লাভ ও বসবাসের শর্তাবলি এবং আচরণ ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা ২০২১ এর ১৭ নম্বর ধারা মোতাবেক বিবাহিত ও গর্ভবর্তী ছাত্রীরা আবাসিক সিট (আসন) পাবে না। বিধায় তারা অতি দ্রুত হলের সিট ছেড়ে দেবে। অন্যথায়, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন নির্দেশনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শ্রেণির এক বিবাহিত ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “হলে ওঠার পর কয়েক মাস আগে তার বিয়ে হয়। বললেই হল ছাড়া যায় না। নিরাপত্তা ও পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয় থাকে। প্রশাসন এগুলো গুরুত্বে নিচ্ছে না। হল ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে অন্তত দুই-এক মাস সময় প্রয়োজন।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী আবাসিক হলটি গত বছরের ১৭ মার্চ উদ্বোধন করা হয়। এতে ৬২৪ ছাত্রীর আসনের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১,২০০ ছাত্রীর আসন বরাদ্দ দেয়। হলটিতে ছাত্রীদের জন্য মোট ১৫৬টি কক্ষ, ১টি পাঠাগার, ১টি ক্যানটিন, ১টি ডাইনিং, প্রতি তলায় ৭টি শৌচাগার, ৯টি গোসলখানা ও ৪টি লিফট আছে।
ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশনার বিষয়ে হলটির প্রাধ্যক্ষ দীপিকা রাণী গনমাধ্যমকে বলেন, “হলে অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থাপনা নেই। ছাত্রীদের সতর্কতার জন্যই দ্রুত হল ত্যাগ করতে হবে। আর নীতিমালা অনুযায়ী কোনো বিবাহিত ছাত্রী হলে আসন পাবেন না। বিবাহিতদের মধ্যে কেউ হল ছাড়ার জন্য সময় চাইলে মানবিক বিবেচনায় তাকে সময় দেওয়া হবে। অনেক দরিদ্র এবং মা-বাবা নেই, এমন ছাত্রীকে আবাসিক সুবিধা দেওয়া জরুরি প্রয়োজন।”
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রীদের বিষয়ে এমন একটি সিদ্ধান্তের কথা সামনে আসে। তখন বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। পরে এই নিয়ম বাতিল করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। তবে অন্তঃসত্ত্বাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে হলে থাকতে নিরুৎসাহিত করা হয়।