বিরতি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকাণ্ড : নিভে গেলো আরেক প্রাণ

  • বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১ বছর আগে
  • Print

সিলেট মহানগরের মিরাবাজারস্থ দাদা পীর মাজার সংলগ্ন বিরতি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরেকজন মারা গেছেন। মিনহাজ উদ্দিন আকন্দ (২৫) নামে যুবক বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান। এ নিয়ে এই ঘটনায় ছয় জন মারা গেলেন।

মিনহাজ সিলেট মহানগরের চৌহাট্টা এলাকার আলাউদ্দিন আকন্দের ছেলে। তিনি বিরতি ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী ছিলেন। দুই বছরের এক ছেলে রেখে গেছেন মিনহাজ। আজ (বৃহস্পতিবার) বাদ জোহর দরগাহ মাজার প্রাঙ্গনে জানাযার নামাজ শেষে দরগাহ কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মিনহাজ উদ্দিনের শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নজরুল ইসলাম মুহিন (৪৭) নামে বিরতি ফিলিং স্টেশনের শিফট ম্যানেজার মারা যান। তিনি মহানগরের পশ্চিম পীরমহল্লা ঐক‍্যতান ২১৫/৩-এর মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে।

মুহিনের মৃত্যুর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর পৃথক সময়ে সিলেট সদর উপজেলার জাঙ্গাঈল গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে তারেক আহমদ (৩২) ও সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কাদিরগাঁও গ্রামের বাদল দাস (৪০) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

তারও আগে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট বিমানবন্দর থানার কোরবানটিলা এলাকার বাসিন্দা রুমেল সিদ্দিক ও পরদিন (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টুকেরবাজার এলাকার ইমন আহমদ (৩২) একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মৃত সবারই শরীরের ৩৫-৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিলো বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে আহত তিনজন এখনো চিকিৎসাধীন।

গত ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিরতি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের কম্প্রেসার কক্ষের একটি সেফটি বাল্ব বিস্ফোরিত হয়। এতে ওই কক্ষে আগুন লেগে নয়জন দগ্ধ হন। দগ্ধদের মধ্যে ৭ জন ওই ফিলিং স্টেশনে কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং দুইজন পথচারী ছিলেন।

পরে হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর দগ্ধ নয়জনকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। দগ্ধদের শরীরে ১৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছিলো।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে- সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সারা দেশের পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ থাকার কথা থাকলেও বিরতি সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওই সময় থাকে খোলা। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় এরকম অবৈধভাবে গাড়িতে গ্যাস দিতে গিয়ে কম্প্রেসার কক্ষের একটি সেফটি বাল্ব বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ওই ৯ জন দগ্ধ হন।

ঘটনার পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তবে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে পর পর ৫ জন মারা গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি বা বিরতি সিএনজি ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ঘটনার পর এ বিষয়ে জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিসন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড (জেজিটিডিএসএল) কর্তৃপক্ষও দায়সারা জবাব দিচ্ছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও নিউজ