ছোট ছোট অপরাধের দায়ে ৫০ টি মামলার অভিযুক্ত ৭০ জন শিশুকিশোরকে সাজা না দিয়ে জাতীয় পতাকা, ফুল আর ডায়রী উপহার দিয়ে পরিবারে কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ জাকির হোসেন। রায়ের ফলে তারা পরিবারের সংগে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে।
দীর্ঘদিন মামলার কারণে আদালতে হাজিরা দেয়ার ফলে শিশুদের লেখাপড়া, মানসিক স্বাস্থ্যসহ স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছিল। নিয়মিত পড়াশুনা, ভালো কাজ করা, সবার সংগে ভালো আচরণ করা, গুরুজনের আদেশ মেনে চলা, বাবা মায়ের সেবা করা, গাছ লাগানো ও পরিচর্চা করা, ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা, অসৎ সংগ ত্যাগ করা, মাদক থেকে দূরে থাকাসহ ৯ টি শর্তে মুক্তি পায় শিশু কিশোররা। সোমবার বেলা ১২ টায় আদালতের এজলাসে তাদের অভিভাবকদের সামনে বিচারক ৯ টি শর্তে এ রায় ঘোষণা করেন।
অভিযুক্ত সবুর মিয়া বলেন, তাকে মিথ্যে মামলায় আসামি করা হয়েছে। আজ সে মুক্ত হয়ে বাড়িতে যাচ্ছে। পরিবারের সাথে মিলেমিশে থাকবে সে। দেলোয়ার হোসেন বলেন, মামলার কারণে সে নিয়মিত স্কুলে যেতে পারেনি। তার লেখাপড়ার ক্ষতি হয়েছে। আজ থেকে আবার সে লেখাপড়া করবে। তাছাহক আহমেদ বলেন, সে মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিল। আজ সে মুক্তি পেয়েছে। আদালতের ৯ টি শর্ত মেনে চলবে। বাবুল মিয়া বলেন, শিশুদের আসামি করার সময় মামলার তদন্ত যেন নিরপেক্ষ হয় সে দিকে খেয়াল রাখার দাবি করেন। শিশুদের অভিভাবকরা বলেন, আজ থেকে তারা শিশুকিশোরদের দেখভাল করবেন। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, শিশু আদালতের একটি পরিবেশ রয়েছে আইন রয়েছে। সে অনুযায়ী বিচার হয়। আদালতের শর্তগুলো মেনে চলার আহ্বান জানান। কেউ শর্ত মেনে না চললে আবার মামলা চালু হবে। প্রবেশন কর্মকর্তা বিষয় গুলো দেখভাল করবেন। একারণে যদি কোন শিশুর কাছে কেউ অর্থ দাবি করেন তা আদালত কে জানাতে বলেন। দেশের স্বাধীনতা দেশপ্রেম নিয়ে বেঁচে থাকার আহ্বান জানান। শিশুরা আগামী দিনের বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে। শিশুদের একজন ভাল মানুষ ও নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠতে হবে।
প্রবেশন কর্মকর্তা শাহ মোঃ শফিউর রহমান বলেন, আদালতের আদেশ তারা মেনে চলছে কি না তিনি তা নিশ্চিত করবেন। শিশু আদালতের পিপি বলেন, আদালতের আদেশে শিশুরা পরিবারের সংগে স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ পাবে। আদালতের বিচারক এর আগেও ৯৫ টি মামলার ১৩০ জন শিশুকিশোর ও দেড় শতাধিক দ¤পতিকে মুক্তি দিয়ে পরিবারের সংগে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন।