অবশেষে সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রী স্মৃতি রানী দাসের আত্মহত্যার নেপথ্যের রহস্য মিলেছে। ঘটনার দুই মাস ১২ দিনের মাথায় তার মৃত্যুর জন্য দায়ী শ্যামল দাস (২১) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) দুপুরে সিলেট নগরের জালালাবাদ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিকেলে জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আদালতে নেয় এসএমপির শাহপরান (র.) থানার সদস্যরা। তিনি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার সুধাংশু দাসের ছেলে।
এ ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন শ্যামল দাস। সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আাদালতের বিচারক সাইফুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
সেই জবানবন্দির বরাত দিয়ে আদালত সূত্র ও পুলিশ জানায়, স্মৃতি রানী দাসের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার হ্যাক করে আপত্তিকর ছবি দিয়ে তাকে ব্লাকমেইল করে মানসিক চাপে ফেলেন শ্যামল দাস। এভাবে তার কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন। তবে, এ ঘটনায় স্মৃতিরানী আত্মহত্যা করবেন তা ভাবতে পারেননি। স্মৃতির ছবি পাঠিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং (বার্তা) পাঠাতো। সর্বশেষ তাকে বিকাশে ২৫০০ টাকা পাঠিয়েছিলেন স্মৃতি। বিকাশের নম্বরের সূত্র ধরেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
শাহপরান (র.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুল হক বলেন, স্মৃতির বাবাকে বাদী করে আমরা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা নিয়েছি। ওই মামলায় শ্যামল দাসকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে সে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ম্যাসেঞ্জার হ্যাক করে স্মৃতি রানী দাসের ব্যক্তিগত ছবি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন শ্যামল দাস। এরপর স্মৃতি রানীকে মানসিক চাপে ফেলে টাকা আদায় করতেন। আত্মসম্মানের ভয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া স্মৃতির মোবাইল ফোনের লক খুলতে পারলে আরও তথ্য জানা যাবে। সেটি সিআইডির মাধ্যমে এক্সপার্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আপাতত ৫ দিনের ক্ষুদে বার্তা আদান-প্রদানের তথ্য তদন্তকারী কর্মকর্তার সংগ্রহে রয়েছে।
প্রসঙ্গত গত ২৫ মে দুপুরে এমসি কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের চার তলার ৪০৩ নং কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে স্মৃতি রানীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি হোস্টেলের ৩য় তলার ৩০৭ নং কক্ষে থাকতেন। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রামে। বাবার নাম যুগল কিশোর দাস। তিনি এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ঘটনার পর তার আত্মহত্যা নিয়ে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়।