বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। এর প্রধান কারণ দীর্ঘ সময় ধরে চলা বিধিনিষেধ ও ঈদের ছুটি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম৷
তিনি বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনও এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার অন্যতম কারণ।
পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের কারণে চলা বিধিনিষেধ ও ঈদের ছুটিতে দীর্ঘ সময় মানুষজন গ্রামের বাড়িতে থাকায় বাসা বাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে পানি জমে এডিস মশার জন্ম হয়েছে। তবে এ পরিস্থিতি এক মাসের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে আসবে।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টাস ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালে মশা নিধনের একটি পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০২০ সালে কাজ করি সে জন্য আক্রান্ত হয় মাত্র ১ হাজার ৪০৫ জন। কিন্তু ২০২১ সালে দেখলাম অনেক বেশি আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি।
তিনি বলেন, নির্মাণাধীন ভবন এলাকাতে কীভাবে এডিস মশা কমানো যায় সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করে দ্রুত ওষুধের ব্যবস্থা করেছি। ১০ জন করে ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়া হয়েছে। লোকজন কম দেখে ৩ হাজার লোক দেওয়া হয়েছে। ওধুষ আমদানিতে মনোপলি ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছি। এটা করেছি ২০১৯ সালে, ২০২০ সালেও চলমান ছিলো। এ বছরও আমরা একই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। জানুযারি থেকে সভা করছি। সবাইকে সতর্ক করেছি তারা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে। এছাড়া কচুরি পানায়ও এ মশা হয়। খালের কচুরি পানা পরিষ্কার করার জন্য হারভেস্ট মেশিন জার্মানি থেকে আমদানির ব্যবস্থা করেছি।
ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইনে ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য তুলে ধরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, এসব দেশে প্রচুর আক্রান্ত হয়েছে। তাদের থেকে বাংলাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেক ভাল অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক যে এবার ডেঙ্গুতে অনেক শিশু মারা গেছে। অনেকে স্বজন হারিয়েছেন। আমরা আর একজনকেও হারাতে চাই না। এবার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে এটা পরের সময়গুলোতে কাজে লাগিয়ে পদক্ষেপ নেব।
দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র বিদেশ সফর করছেন এ বিষয়টি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে মস্ত্রী বলেন, পারিবারিক সমস্যার কারণে তিনি দেশের বাইরে ছিলেন, তবে এখন চলে এসেছেন। তিনি সচেতন বিধায় ২৬ সেপ্টেম্বর আসার কথা থাকলেও তার আগেই চলে এসেছেন। তিনি যথেষ্ট কাজ করছেন। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। মানুষকে সচেতন করা যাচ্ছে না। পাশের বাড়ির মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছে, তারপরও এরা সচেতন হচ্ছে না। এদের নিজে থেকে সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি, মশা নিধনের জন্য জরিমানা করছি। সারা পৃথিবীতে ১০ কোটি থেকে ৪০ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। ৭ লাখ লোক মারা যায়। তবে আমি আশাবাদী এক মাসের ভেতরে কমে যাবে।