এক ঘণ্টা মোবাইল চার্জ দিতে ১৫০ টাকা!

  • বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২২, ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২ বছর আগে
  • Print

বন্যায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সুনামগঞ্জের হাওর পাড়ের মানুষ। বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ ত্রাণ, শুকনো খাবার, মোমবাতির জন্য হাহাকার করছেন। ৮ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। প্রায় সবার মোবাইল ফোন বন্ধ, নেই নেটওয়ার্কও। আত্মীয়-স্বজনরা যোগাযোগ করতে না পেরে দুশ্চিন্তায় আছেন। মোবাইল চার্জ দেওয়ার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন সবাই। আর এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়েছে একদল ব্যবসায়ী। প্রতিটি মোবাইল ফোন চার্জ দিতে ঘণ্টাপ্রতি ১৫০ থেকে ১০০ টাকা করে নিচ্ছেন তারা।

সরেজমিন দেখা গেছে, সুনামগঞ্জ শহরের আব্দুজ জহুর সেতুতে পশ্চিমবাজার, রাধানগর নৌকাঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে ১৫-২০ জন ব্যবসায়ী জেনারেটরের মাধ্যমে মোবাইল চার্জের ব্যবসা করছে। চার্জ দেওয়ার জন্য মানুষের দীর্ঘ লম্বা সারি দেখা গেছে কয়েকটি জায়গায়। প্রতিটি মোবাইল চার্জ দিতে গুনতে হচ্ছে ১০০ টাকা। কেউ কেউ ১২০ থেকে ১৫০ টাকা করেও নিচ্ছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যুৎবিহীন সুনামগঞ্জের মানুষ আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কয়েকদিন ধরে যোগাযোগ করতে পারছেন না। মোবাইল ফোনে চার্জ নেই বেশিরভাগ মানুষের। এদিকে নেটওয়ার্কের সমস্যা চলছে। তাই স্বজনেদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন তারা। যোগাযোগের জন্য মোবাইল ফোনে চার্জ করার উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে সুযোগ সন্ধানী কিছু ব্যবসায়ী অমানবিক আচরণ করছেন।

আব্দুজ জহুর সেতুতে ফোন চার্জ করতে বিশ্বম্ভরপুর হাওর থেকে আসা আব্দুর রহিম বলেন, ‘কয়েকদিন বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেছে। আত্মীয়-স্বজনরা কল করে পাচ্ছেন না। তারা দুশ্চিন্তা করছে। ভয়াবহ এই পরিস্থিতির মাঝে ফোনে চার্জ করতে এসেছি। এক ঘণ্টা চার্জ বাবদ ১০০ টাকা দিতে হচ্ছে।’

আদনান আহমেদ নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটার দিয়ে চার্জের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে আশ্চর্য হলাম, সকালে ৩০-৪০ টাকা দিয়ে মোবাইল চার্জ করা গেছে। কিন্তু ভিড় বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি মোবাইল চার্জে ১০০ টাকা চাচ্ছে তারা।’

নাম প্রকাশ না করারর শর্তে আব্দুজ জহুর সেতু এলাকার এক দোকানি বলেন, ‘আমরা জেনারেটরের মাধ্যমে ঘণ্টা হিসাবে মোবাইল চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। জেনারেটর যে চলছে তারও তো তেল খরচ আছে। অনেকের ফোন চার্জ করতে অনেক সময় লাগতেছে। সেই হিসাবে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে না।’

সুনামগঞ্জ তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী রায়হান কবির বলেন, ‘বিদ্যুৎ সচল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আজ পৌর এলাকার কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেনারেটর দিয়ে কিছু ব্যবসায়ী মোবাইল চার্জ দিয়ে বেশি টাকা নিচ্ছে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও নিউজ