২০২৪ সালটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বিপ্লবী ও স্মরণীয় বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তারুণ্যের শক্তি, গণজাগরণ এবং পরিবর্তনের অগ্নিঝরা অধ্যায় হয়ে ওঠা এই বছরটি বিদায় নিয়েছে। ৩১ ডিসেম্বরের শেষ সূর্যের আলো যেন বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা বার্তা দিয়ে গেছে।
২০২৪ সালে বাংলাদেশে রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের এক নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে। বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে দেশজুড়ে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থান ইতিহাসের পাতায় সোনালি হরফে স্থান করে নিয়েছে। এই অভ্যুত্থান শুধু দেশেই নয়, বিশ্বমঞ্চেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ১৯৭১ সালের পর দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বছর।
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান সংঘাত, বিশেষত ইউক্রেন সংকট, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বিপ্লব বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল।
বিদায়ী বছরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় এবং তার রাজনীতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার শীর্ষে ছিল। অন্যদিকে, চীন ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা অব্যাহত থাকলেও বড় ধরনের সংঘাত দেখা যায়নি। তবে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের অস্থিরতা এবং বিএসএফের গুলি চালিয়ে বাংলাদেশিদের হত্যা ছিল অত্যন্ত দুঃখজনক।
২০২৪ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি কিছুটা চাপের মধ্যে থাকলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনৈতিক সংস্কার এবং সিন্ডিকেট ভাঙার লক্ষ্যে কাজ করে। পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্যোগ এবং পণ্য আমদানি বাড়ানোর ফলে নিত্যপণ্যের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে।
বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের বিপ্লবকে স্বীকৃতি দিয়ে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ বাংলাদেশকে ২০২৪ সালের ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করেছে।
নতুন বছরের সূচনা একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ এবং স্থিতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সংস্কার, এবং জাতীয় নির্বাচনের দিকে দেশবাসী তাকিয়ে আছে।
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই সবাইকে। শ্রদ্ধা জানাই ২০২৪ সালের গণআন্দোলনে প্রাণ উৎসর্গকারী শহীদদের এবং সহমর্মিতা জানাই আহতদের প্রতি।