আজ রবিবার, ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ওসমানীনগরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি উৎপাদন, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভোক্তা

  • আপডেট টাইম : মার্চ ২৪, ২০২৫ ১:০৮ অপরাহ্ণ

ওসমানীনগরের বিভিন্ন বাজারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে নিম্নমানের মিষ্টি, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। গোয়ালাবাজার, তাজপুর, দয়ামীর, বুরুঙ্গা, হাজিপুর, উমরপুর, ঊনিশমাইল, শেরপুর আওরঙ্গপুর বাজার, মাদার বাজার ও কুরুয়া বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে মিষ্টির কারখানাগুলোতে মানহীন উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে এসব খাদ্য।

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এসব মিষ্টিতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ময়দা, অবৈধ চিনি, ভেজাল ঘি ও পাম ওয়েল। এছাড়া সংরক্ষণ ও আকর্ষণ বৃদ্ধির জন্য মেশানো হচ্ছে সোডা, স্যাকারিন, ফরমালিন ও কৃত্রিম রঙ, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন একই কড়াইয়ে মিষ্টি ভাজা হচ্ছে, যেখানে অপরিচ্ছন্ন পাত্রে সংরক্ষণ করা হচ্ছে রসালো খাবার।

বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে অসচেতন ভোক্তারা এসব মিষ্টি ইফতারে গ্রহণ করছেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

স্থানীয় দোকানগুলোতে মিষ্টি বিক্রির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ওজনের কার্টন, পলিথিন ও শিরার ওজন হিসেব করে গ্রাহকদের ঠকানো হচ্ছে। অনেক দোকানে ১ কেজি মিষ্টির পরিবর্তে ৯০০-৯৫০ গ্রাম সরবরাহ করা হয়, ফলে গ্রাহকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এসব দোকানকে প্রতিদিনের বিক্রির নির্দিষ্ট পরিমাণ ভ্যাট পরিশোধ করার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। প্রশাসনের নজরদারির অভাবে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ফুটপাতে অনিরাপদভাবে জিলাপি তৈরি করা হচ্ছে, যা আগুনজনিত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। ২০২৩ সালে গোয়ালাবাজারে এমন একটি দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তি প্রাণ হারান। এরপরও এসব অনিয়ম বন্ধ হয়নি।

স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়ী তুষার দাস বলেন, “আমি কারখানার মান উন্নয়নের চেষ্টা করছি, তবে এখনো পুরোপুরি সফল হইনি।”

উপজেলা ফুড ইন্সপেক্টর মনোয়ার হোসেন জানান, “আমরা বাজার দর পর্যবেক্ষণ করি, কিন্তু উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারি না।”

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মঈনুল আহসান বলেন, “অতিরিক্ত রাসায়নিক ও রঙ মানবদেহের কিডনি ও লিভারের ক্ষতি করতে পারে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ক্ষতিকর খাদ্য উৎপাদন বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন..

এই সম্পর্কিত আরও নিউজ...