জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অভিযুক্ত সবাইকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে সর্বসম্মতভাবে এই রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।
রায়ের গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ
১. খালাসের ঘোষণা:
- মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ যাঁদের সাজা হয়েছিল, তাঁরা সবাই খালাস পেয়েছেন।
২. সাজার রায় বাতিল:
- বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ।
৩. আপিল মঞ্জুর:
- খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল, ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের আপিল মঞ্জুর করা হয়েছে।
রায়ের প্রেক্ষাপট
- অভিযোগ:
২০০৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযোগ করে, এতিমদের সহায়তার জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছিল। - প্রাথমিক রায়:
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও তারেক রহমানসহ অন্যদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। - হাইকোর্ট রায়:
হাইকোর্ট ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করে। - আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত:
আপিল বিভাগ পুরো মামলাকে “ম্যালিসাস প্রসিকিউশন” (বিদ্বেষমূলক মামলা) বলে অভিহিত করে।
আইনজীবীদের প্রতিক্রিয়া
- খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন:
“আদালত সঠিকভাবে রায় দিয়েছেন। বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়েছে। যাঁরা আপিল করতে পারেননি, তারেক রহমানসহ তাঁরাও খালাস পেয়েছেন।” - দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান:
“মামলার সব আপিল মঞ্জুর হয়েছে। আপিল বিভাগের রায় অনুসারে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”
মামলার দীর্ঘ পথচলা
১. মামলা দায়ের:
- ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুদক মামলাটি দায়ের করে।
২. বিশেষ জজ আদালতের রায়:
- ২০১৮ সালে প্রথম দফায় সাজা প্রদান।
৩. হাইকোর্টের রায়:
- সাজা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য আপিল খারিজ।
৪. আপিল বিভাগে শুনানি:
- ২০২4 সালের ৭ জানুয়ারি শুরু হওয়া শুনানি ১০ জানুয়ারি রায় ঘোষণা করে।
রায়ের গুরুত্ব
- এই রায়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একটি বড় বাঁধা দূর হলো।
- আপিল বিভাগ পুরো মামলাকে “বিদ্বেষমূলক” বলে চিহ্নিত করায় ভবিষ্যতে এমন মামলাগুলো নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হতে পারে।
কতজন পড়েছেন: 202
এই সম্পর্কিত আরও নিউজ...