
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬ জন নার্সিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও প্রতারণার মাধ্যমে মাসের পর মাস বেতন উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এদের মধ্যে কেউ কেউ টানা ২২ মাস কর্মস্থলে না থেকেও কৌশলে বেতন ও বোনাস গ্রহণ করেছেন।
জানা গেছে, হাসপাতালের মোট ৪৩ জন নার্সিং কর্মকর্তা কর্মস্থলে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন। তবে এই ৪৩ জনের মধ্যে ১৬ জনের প্রতারণার মাধ্যমে বেতন-ভাতা উত্তোলনের বিষয়টি সম্প্রতি নজরে আসে।
অভিযুক্তদের তালিকা
অভিযুক্ত নার্সিং কর্মকর্তারা হলেন: মো. ইউসুফ, মো. আব্দুর রহমান, লিপি রানী, আওলাদ হোসেন মাসুম, জাহেদ আহমদ, এম এফ কে জান্নাত, একরামুল হক, রুনা, কামরুন্নাহার, ঝিলি ধর, মোহাম্মদ আলী আশরাফ, মো. শাহিন মিয়া, শামীমা জান্নাত, জান্নাতুল ফেরদাউস, মোছা. শিরীন সুলতানা এবং লাভলী বেগম। এদের মধ্যে এম এফ কে জান্নাত সবচেয়ে বেশি সময় ধরে, অর্থাৎ ২২ মাস বেতন ও ৬টি বোনাস উত্তোলন করেছেন।
নোটিশ জারি ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা
৮ জানুয়ারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করা হয়। এতে বলা হয়, প্রতারণার মাধ্যমে উত্তোলনকৃত বেতন-ভাতা ফেরত দেওয়ার জন্য তাদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. ওমর রাশেদ মুনীরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মন্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) সিলেট ওসমানী মেডিকেল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান আহমদ তাপাদার নিশ্চিত করেছেন যে, বিষয়টি নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
প্রতারণার প্রভাব ও পরিণতি
স্বাস্থ্যখাতে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অভিযুক্তদের থেকে বেতন-ভাতা ফেরত নেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ঘটনায় হাসপাতালটির অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা এবং নজরদারির দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্বাস্থ্যখাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর আরো কঠোর হওয়ার প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।