
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে তাদের সংস্কার সংক্রান্ত মতামত জমা দিয়েছে। এতে দলটি রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে এক কাতারে রাখার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে বিএনপির প্রতিনিধি দল কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের কাছে এই মতামত হস্তান্তর করে। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল হোসেন জবিউল্লাহ।
বিএনপি জানিয়েছে, প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সুপারিশের সঙ্গে তারা একমত হলেও কিছু প্রস্তাবে মতভেদ রয়েছে। বিশেষ করে প্রশাসনে পদোন্নতির নীতিমালা ও এসএসপি ব্যবস্থা বাতিলের বিষয়ে তারা ভিন্নমত পোষণ করেছে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়ে বিএনপি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে এবং কিছু বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছে। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করার কিছু প্রস্তাবে দলটি আপত্তি জানিয়েছে, বিশেষ করে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ব্যবস্থাপনার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের আওতায় রাখার পক্ষে মত দিয়েছে।
বিএনপি বলেছে, প্রস্তাবিত সংবিধান সংশোধনে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে একই সমতলে রাখা হয়েছে, যা তাদের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। পাশাপাশি, “প্রজাতন্ত্র” শব্দের পরিবর্তে “জনগণতন্ত্র” বা “নাগরিকতন্ত্র” ব্যবহারের প্রস্তাবকে তারা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছে।
দলটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ নিয়ে আরও আলোচনা চায়। নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার সুপারিশ করেছে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।
বিএনপির মতে, এসব সংস্কার ও সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা প্রয়োজন এবং দলটি এ নিয়ে ভবিষ্যতে আরও মতামত উপস্থাপন করবে।